বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন অনেক কিছুই চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। স্বাস্থ্য সেবাও এর ব্যতিক্রম নয়। Digital Health বিভিন্ন প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে আমাদের কাছে স্বাস্থ্যসেবাকে আরোও সহজলভ্য করে তুলছে।
বিভিন্ন ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন মোবাইল অ্যাপস, বিভিন্ন Wearable Devices, হেলথ ওয়েবসাইট ইত্যাদি ব্যবহার করে সহজতর উপায়ে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করা, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করার উপায়কে Digital Health বলা হয়।
Digital Health বলতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নতর করার উদ্দেশ্যে রোগীর ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড, টেলিমেডিসিন এবং অন্যান্য ডিজিটাল সরঞ্জামাদির ব্যবহারকে বুজায়।
World Health Organization (WHO) এর মতে,
“the use of digital technologies to improve health and healthcare service delivery.”
Digital Health সম্পর্কে আরোও জানুন
এমন অনেক সময় রয়েছে যখন সরাসরি ডাক্তারের সেবা নেওয়া সম্ভব নয়। এমন মুহুর্তগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে ডিজিটাল হেলথ গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। আবার সারাদিনে কি পরিমাণ হাঁটা হয়েছে, কখন পানি গ্রহণ করতে হবে কিংবা হার্টরেট, পালস ইত্যাদি রেকর্ড জানতে বিভিন্ন পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি সহায়তা করছে। অর্থাৎ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটিই ডিজিটাল ক্ষেত্রে রুপান্তরিত হয়েছে।
Digital Health কে মোটামুটিভাবে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়:
এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যখন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় টেলি হেলথ একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। টেলিমেডিসিন টেলিহেলথ এর একটি গুরুত্বপুর্ণ ক্ষেত্র।
mHealth বলতে বোঝায় মোবাইল ডিভাইস, যেমন স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান । এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য মোবাইল অ্যাপ, দূরবর্তী পর্যবেক্ষণ, ডাক্তারের সাথে ভিডিও কলে সংযোগের জন্য বিশেষায়িত এপ ইত্যাদি।
হেলথ আইটি বলতে বোঝায় ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ডস (EHRs), ইলেকট্রনিক প্রেসক্রাইবিং, এবং অন্যান্য ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে রোগীর স্বাস্থ্যের তথ্য নিরাপদে পর্যবেক্ষণ, সংরক্ষণ ও শেয়ার করা। HIT স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
পরিধানযোগ্য ডিজিটাল ডিভাইস হল ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা শরীরে পরা যায়, যেমন স্মার্টওয়াচ এবং ফিটনেস ট্র্যাকার। এই ডিভাইসগুলি বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত মেট্রিক্স যেমন হৃদস্পন্দন, হাঁটার পরিমাণ এবং ঘুমের ধরণ ইত্যাদি নিরীক্ষণ এবং ট্র্যাক করতে পারে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল হেলথ কোম্পানিগুলোর মাঝে রয়েছে:
Apple Health হল একটি মোবাইল স্বাস্থ্য অ্যাপ যা ব্যবহারকারীদের তাদের স্বাস্থ্যের ডেটা ট্র্যাক করতে, স্বাস্থ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সাথে সংযোগ করার সুযোগ করে দেয়। অনেকেই নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক পরিকল্পনা তৈরিতে এপল হেলথকে বেছে নিচ্ছে।
নাইজেরিয়ান ভিত্তিক স্টার্টআপ, CribMD, গ্রামীণ এলাকার রোগীদের টেলিমেডিসিন পরিষেবা প্রদান করে যাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের অ্যাক্সেস নেই। সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক কোম্পানী, Holmusk, রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরিকল্পনা তৈরি করতে Digital Health প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
বাংলাদেশে, BRAC কর্তৃক নারীদের কথা বিবেচনা করে Maya Apa নামে একটি ডিজিটাল হেলথ এপ বের করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশে Milvik, Prova Health ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান সমুহ ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হইয়ে উঠছে। এই প্রতিষ্ঠান সমূহ টেলিমেডিসিন, স্যাম্পল কালেকশন, হেলথ ইন্সুরেন্স সহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে থাকে।