Big Data এমন একটি শব্দ যা বিশ শতাব্দীতে ক্রমবর্ধমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই শব্দগুচ্ছ দ্বারা প্রতিদিনের নানা রকমের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কারনে যে বিপুল পরিমাণ ডাটা উৎপন্ন হয় তাকে বুঝায়। এই ধারণাটি প্রায় কয়েক দশক ধরে চলে আসলেও এটি কোন এক সময় এতটা বিশাল ছিলো না।
কিন্তু ইন্টারনেটের আবির্ভাব এবং নতুন নতুন নানা ডিভাইসের বিস্তারের ফলে ডাটার ভলিউম এখন এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যেখানে এটি পরিচালনা এবং বিশ্লেষণ করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তিগত ভাবে, Big Data বলতে এমন Data সেটগুলোকে বোঝায় যেগুলো প্রথাগত কৌশল দ্বারা পরিচালিত Data ম্যানেজমেন্ট টুল এর পক্ষে বিশ্লেষণ করার জন্য খুব বড়, খুব জটিল কিংবা উৎপন্ন হওয়ার হার অত্যাধিক।
বিপুল পরিমাণ তথ্য যা পরিষেবা প্রদানকারি সংস্থাগুলো তাদের গ্রাহক, পণ্য এবং তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে তৈরি এবং সংগ্রহ করে। এই সকল তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে নতুন নতুন ব্যবসায়িক সু্যোগ তৈরি হতে পারে।
বিগ ডাটা বলতে ব্যক্তি এবং সমাজের দ্বারা উৎপন্ন সেই বিপুল পরিমাণ তথ্যকে বোঝায় যার ভিতরে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং অনলাইন কেনাকাটার অভ্যাস থেকে শুরু করে, স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস ডাটা পর্যন্ত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
Techopedia এর মতে - "extremely large and complex data sets that can be analyzed computationally to reveal patterns, trends, and associations, especially relating to human behavior and interactions."
গুগলে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট Vik Gundotra এর মতে, "Big Data হলো একবিংশ শতকের জ্বালানি এবং এনালিটিক্স হলো ইঞ্জিন।"
প্রতিনিয়ত আমাদের ডিটিজাল কার্যক্রমের ফলে উৎপন্ন ডাটার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি অনুমান করা হয়, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্ব ১৭৫ জেটাবাইট ডাটা তৈরি করবে। Big Data বিভিন্ন উৎস দ্বারা তৈরি হয়। নানা রকমের ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ই-কমার্স এবং মোবাইল ডিভাইসগুলি হল বিগ ডাটার প্রাথমিক উৎস। বিগ ডাটা তৈরি হওয়ার বেগ বাড়ছে প্রতিনিয়তই।
এই সকল Data তৈরি এবং বিশ্লেষণ করা হচ্ছে খুবই দ্রুততার সাথে। কিন্তু তারপরেও এই ডাটাগুলোর কিছু অংশমাত্র বিশ্লেষণ করা সম্ভব হচ্ছে। ডাটা সমুহের আকৃতি এবং তৈরি হওয়ার হার এত বেশি যে সম্পুর্ণ বিশ্লেষণের আগেই দেখা যাচ্ছে আরো নতুন ডাটা জমা হয়ে যাচ্ছে। নানা এনালিটিক্স বা ডাটা বিশ্লেষণকারী সংস্থাগুলো এই ডাটা পরিচালনা এবং বিশ্লেষণের জন্য গবেষণা করছে। উন্নততর ও দ্রুততর বিশ্লেষণ ছাড়া ক্রমবর্ধমান এই সকল ডাটাকে কাজে লাগানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।
স্বাস্থ্যসেবা, ফিনেন্স, রিটেইল এবং বিপণন শিল্প হলো এমন কয়েকটি শিল্প যা নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে সহজ করতে এবং ব্যবসার মান বৃদ্ধির জন্য বিগ ডাটা ব্যবহার করছে।
বিভিন্ন রকমের Big Data রয়েছে। যেমন:
এছাড়াও আরো নানা রকমের Big ডাটা রয়েছে এবং দিন দিন এদের ধরণও বেড়ে চলেছে।
গ্রাহকের Data বিশ্লেষণ করে, সংস্থাগুলি গ্রাহকের আচরণ এবং পছন্দগুলো সম্পর্কে জানতে পারে যা তাদের গ্রাহকের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে যা সাহায্য করে। যেমনঃ নানা রকমের অনলাইন রিটেইল শপিং ওয়েবসাইট আমাদের পছন্দ অনুযায়ী পন্য দেখিয়ে থাকে ।
উদাহরণস্বরুপ, আমরা Alibaba, Amzon এর মতো ওয়েবসাইটগুলোর উদাহরণ টানতে পারি। তারা তাদের বিশাল গ্রাহক শ্রেনীর ডাটা থেকে আমাদেরকে নানা রকমের প্রস্তাব দিয়ে থাকে। যেমন: করিম সাহেব নামের একজন একটি জামা কিনলো, সেই জামার সাথে মিলিয়ে তাদের অন্য গ্রাহকরা কি ধরণের জিনিস নিয়েছে তা থেকে এই ওয়েবসাইটগুলো করিম সাহেব অন্য আর কি নিতে পারেন সে ব্যাপারে প্রস্তাব দিতে পারে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক ও স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত নিতে big data ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ এটি বিভিন্ন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে নানা রকমের তথ্য যোগ করিয়ে একটি পুর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরতে সাহায্য করে থাকে। একই সাথে নানা রকমের প্রক্রিয়াগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করা এবং কর্মচারীদের দ্বারা আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করার হারকে হ্রাস করার মাধ্যমে বিগ ডাটা বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে আরোও দক্ষ করে তুলতে পারে।