Corporate Synergy ধারণাটি দ্বারা বোঝায় দুই বা ততোধিক কোম্পানি বা ব্যবসার সংমিশ্রণে আরো বড় ব্যবসা বা কোম্পানি গড়ে তোলা যা আগের তুলনায় বেশি ক্ষেত্রে কিংবা বড় আকারে পরিষেবা প্রদান করতে পারে। এই ধারণাটি ব্যবসার জগতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রায়শই এটিকে একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণের মূল চালক হিসাবেও দেখা হয়।
"Corporate Synergy" শব্দটি ২০ শতকের শেষের দিকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং এটি গ্রীক শব্দ "synergeia" থেকে এসেছে। যার অর্থ "একত্রে কাজ করা।" এই ধারণাটি সর্বপ্রথম একত্রীকরণ এবং অধিগ্রহণের প্রেক্ষাপটে জনপ্রিয় করা হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে দুই বা তার থেকে বেশি কোম্পানি একত্রে তাদের শেয়ার এবং পরিষেবার ক্ষেত্র একত্রিত করে। এতে করে তারা অধিক পরিমাণে এবং আরোও বড় আকারে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে।
Corporate Synergy হল এমন একটি ধারণা যেখানে দুই বা ততোধিক কোম্পানির বা ব্যবসার সংমিশ্রণ এর ফলে, তাদের অংশগুলির যোগফলের কারনে আগের চেয়ে একটি বড় আকারে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে।
অধিকতর দক্ষতা, কার্যকারিতা এবং লাভ অর্জনের জন্য দুই বা ততোধিক কোম্পানি বা ব্যবসার সম্পদ এবং ক্ষমতার সম্প্রসারণ ও সমন্বয়ের প্রক্রিয়া
এমন একটি ধারণা যা দুই বা ততোধিক কোম্পানি বা ব্যবসার সমন্বয়ের ফলে অতিরিক্ত উৎপাদন, নতুন পণ্য উদ্ভাবন এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জন্য আগের থেকে বেশি সুযোগ তৈরি করে।
ব্যবসায়িক কৌশল বিশেষজ্ঞ মাইকেল পোর্টার এর মতে , “the combination of two or more companies that results in a greater whole than the sum of its parts.”
Investopedia এর মতে, "the added value that a company realizes when it merges with or acquires another company"
Corporate Synergyর বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অপারেশনাল সিনার্জি, যা অর্জিত হয় নানা রকমের প্রাতিষ্ঠানিক কাজ বন্টণ এবং ব্যয় কমিয়ে আনার মাধ্যমে। এই ধরনের সমন্বয়ের ফলে উল্লেখযোগ্য হারে খরচ কমে আসে, সেই সাথে বাড়তে পারে দক্ষতা এবং কার্যকারিতা।
একই সাথে রয়েছে, Revenue Synergy, যা বিভিন্ন পণ্যের অফার সম্প্রসারণ। এটি নতুন বাজার সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
এটির আরেকটি প্রকার হল strategic synergy। এটি বিভিন্ন পণ্যের অফারগুলির সম্প্রসারণ এবং নতুন বাজার তৈরির নানা রকমের সম্মিলিত কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে করা যেতে পারে। এইক্ষেত্রে কৌশল হলো আলোচ্য বিষয়। এই ধরনের সিনার্জি বিক্রয় বৃদ্ধি করতে পারে। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি উদ্ভাবন এবং অন্যদের থেকে পার্থক্য বৃদ্ধি করতে এটি ব্যবহৃত হতে পারে।
তবে, Corporate Synergy তে নানা রকমের কোম্পানি এর সব সময়ই একীভূত হতে হবে এমন না, পারস্পরিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে একজনের ব্যবসার সাথে অন্যজনের সাহায্য করাও এর উদাহরণ হতে পারে।
বাস্তব জীবনে ছোট থেকে বড় নানা রকমের কর্পোরেট সিনার্জি দেখা যেতে পারে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটি হরহামেশাই দেখা যায়। ফেসবুক কর্তৃক হোয়াটস এপ অধিগ্রহণ, কিংবা গুগল কতৃক ইউটিউব অধিগ্রহণ এর উদাহরণ হতে পারে।
এবার ছোট একটি ক্ষেত্র নিয়ে কথা বলা যাক, একটি থান কাপড় বিক্রেতা কোন একটি টেইলার্সের সাথে Corporate Synergyতে চলে গেলেন। কাপড় বিক্রেতা তার কাস্টমারদের ঐ টেইলার্সের রিকোমেন্ডেশন দিতে পারেন আবার টেইলার্স তার ক্রেতাদেরকে কাপড় আনতে ঐ বিশেষ দোকানে পাঠাতে পারেন, এতে দুইজনই লাভ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে তারা লাভের শতাংশ নিতেও পারেন আবার নাও নিতে পারেন।
আবার ধরলাম “ক” শিল্প প্রতিষ্ঠান কিছু পণ্য তৈরি করে, আবার “খ” প্রতিষ্ঠানটি অন্য আরো কিছু। দেখা গেলো একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা ভালো, আর অন্যটির প্রচারণা। এই দুইটি প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে “গ” নামের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করলো। এতে করে তাদের পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেলো। তাদের উৎপাদন বাড়ল, প্রচারণা বাড়লও যার ফলে বাজারে চাহিদাও বাড়লও। চাহিদা বাড়লে অনেক পণ্য তৈরি হলো, যার কারণে উৎপাদন খরচও কমে আসলো।
টেলিকম অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের সার্ভিস এরিয়া ও কোয়ালিটি বাড়াতে একত্রীকরণ করতে পারে। অনেক সময় নানা রকম পণ্যের সমন্বয়ে Group of Industries গড়ে উঠে।