জীবাশ্ম জ্বালানির উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রকমের প্রযুক্তির পরীক্ষা-নিরিক্ষা চলছে। পরিবহনখাতে এমনই একটি প্রযুক্তি হলো Electric Vehicle বা EV. এই ধরনের যানবাহন গ্যাসোলিন কিংবা তেলের উপরে নির্ভরশীল নয় বিধায় Carbon Footprint কমিয়ে আনতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
যে সকল যানবাহন জীবাশ্ম জ্বালানি (যেমন তেল, গ্যাসোলিন ইত্যাদি) ব্যবহার করে না, যার কার্বন নিঃসরণের হার শুন্যের কোটায় এবং বিদ্যুৎই মূল চালিকাশক্তি, সে সকল যানবাহনকে Electric Vehicle (EVs) বলা হয়।
সহজ ভাষায় বলতে হলে,
বৈদ্যুতিক গাড়ি হল এমন ধরনের যানবাহন যা পেট্রোল বা ডিজেল এর পরিবর্তে বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হয়।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে সংজ্ঞা,
Electric Vehicle হল ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক মোটর এবং পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স এর মতো উপাদান ও যন্ত্রাবলির একটি জটিল সিস্টেম, যা গাড়িটিকে শক্তি দেওয়ার জন্য একসাথে কাজ করে এবং এতে Combustion Engine ব্যবহার করা হয় না।
English Definition:
US Department of Energy এর মতে "a vehicle that is powered by an electric motor and battery, rather than an internal combustion engine."
EV-তে Internal Combustion Engine (ICE) বা ফুয়েল ইঞ্জিন নেই এবং পরিবর্তে ইলেকট্রিক মোটর থাকে।
এটি ব্যাটারি চালিত এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন Lithium-ion ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়।
EV থেকে চালানোর সময় কোনো কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) বা অন্যান্য দূষণকারী গ্যাস নির্গত হয় না। তার মানে এটি শূন্য কার্বন নির্গমন (Zero Emission) করে থাকে।
যেহেতু ব্যাটারি চার্জ করা লাগে তাই চার্জিং স্টেশন থেকে ইলেকট্রিক চার্জার ব্যবহার করে ব্যাটারি চার্জ দিতে হয়।
Electric Vehicleকে তিনটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা যেতে পারে:
এই ধরণের যান সম্পূর্ণভাবে বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত এবং এতে কোনো ফুয়েল ইঞ্জিন বা combustion engine নেই। তার মানে কোনো জ্বালানি হিসাবে কোনো পেট্রোল বা ডিজেলের দরকার হয় না। এইসব ভেহিক্যাল এ ব্যাটারি চার্জ করার জন্য চার্জিং স্টেশন বা হোম চার্জার ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ: Tesla Model 3, Nissan Leaf
প্লাগ-ইন হাইব্রিড ধরণটিতে বৈদ্যুতিক মোটর এবং ফুয়েল ইঞ্জিন উভয়ই থাকে। যার ফলে এটি ব্যাটারি এবং পেট্রোল উভয় জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করে। প্রয়োজন অনুযায়ী এটি EV মুড বা রেগুলার মুড এ চালানো যায়।
সাধারণত স্বল্প দূরত্বের জন্য বিদ্যুৎ এবং দীর্ঘ দূরত্বের জন্য ফুয়েল ব্যবহার করে।
উদাহরণ: Toyota Prius Prime, Mitsubishi Outlander PHEV, BMW i8
হাইব্রিড ধরণটি প্রধানত ফুয়েল ব্যবহার করে, তবে কিছু অংশে ব্যাটারির সাহায্য নেয়। এই ধরণের যান এ আলাদা করে চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না কারণ ইঞ্জিন এবং ব্রেকিং সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় এবং ব্যাটারি চার্জ হয়।
উদাহরণ: Toyota Prius (HEV), Honda Insight, Toyota Camry Hybrid
এই দুটি বিভাগ ছাড়াও, যাত্রীবাহী গাড়ি, বাস, ট্রাক এবং সাইকেল সহ বৈদ্যুতিক যানের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদ্যুতিক স্কুটার এবং মোটরসাইকেলের মতো পরিবহনের প্রতিও আগ্রহ বাড়ছে।
EV এর জগতে বিখ্যাত কিছু কোম্পানির মাঝে রয়েছে:
কার্বন নিঃসরণ বা zero emission হওয়ায় দূষণ কম হয় তাই এটি পরিবেশবান্ধব এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ফুয়েল এর ব্যবহার কমে যায় এবং বিদ্যুতের খরচ পেট্রোল তুলনায় কম হওয়ায় এটি সাশ্রয়ী হয়ে থাকে।
কম মেকানিক্যাল পার্টস থাকায় মেরামতের প্রয়োজনীয়তা কম পড়ে ফলে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম হয়।
ইলেক্ট্রিক মোটর ফুয়েল ইঞ্জিন এর চেয়ে অনেক কম শব্দ তৈরী করে ফলে শব্দদূষণও কম হয়।
Tesla হল বিশ্বের সবচেয়ে সুপরিচিত Electric Vehicle প্রস্তুতকারকদের মধ্যে একটি। এই কোম্পানি দ্বারা উৎপাদিত BEV এবং PHEV সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায়, Joule হল একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি যা Optimal Energy নামে একটি স্থানীয় কোম্পানি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। গাড়িটি বিশেষভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বাজারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। আমদানি করা Electric Vehicle এর তুলনায় এটিকে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে বিকল্প হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল।
ব্রাজিলে, Motobee নামক একটি স্টার্ট-আপ বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল তৈরি করছে যা স্থানীয় বাজারের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। বাইকগুলি সাশ্রয়ী এবং এমনভাবে মূল্য নির্ধারিত করা হয়েছে যান সকল শ্রেণির মানুষ এটি কিনতে পারে। Bee U1 এর একটি নেতৃস্থানীয় মডেল।
বাংলাদেশ ২০১৮ সালে Palki Motors নামে EV কোম্পানি স্থাপিত হয়। এটি সুলভে বাংলাদেশের মানুষের জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুত করছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি চারটি মডেল সকলের জন্য উন্মুক্ত করেছে।
Using the term in Sentences:
বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালক হল চার্জিং অবকাঠামোর ক্রমবিকাশ। ভবিষ্যতে নতুন প্রযুক্তি যেমন Fast Charging, Solid State Battery, এবং Renewable Energy Integration EV-কে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলবে। কারণ এটি ব্যতীত কোনো একটি গুরুত্বপুর্ণ মুহুর্তে চার্জ শেষ হয়ে গেলে যাত্রিগণ বিপদে পড়ে যেতে পারে। আবার যেহেতু এই ধরণের যানবাহন ব্যাটারি এর উপরে নির্ভরশীল সেহেতু এমন ব্যাটারি তৈরিতে ব্যয় করতে হবে যা দীর্ঘস্থায়ী।