Global Warming একটি বৈশ্বিক অভিশাপ। প্রতিনিয়ত বিশ্বে এই সমস্যার কারণে ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ হলো Greenhouse effect. এর ফলে আমাদের বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফলাফল হলো গ্লোবাল ওয়ার্মিং। সাইক্লোন, টর্নেডো, টাইফুন এর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনেও Greenhouse effect এর হাত রয়েছে।
যে প্রক্রিয়ায় ভুপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ বিভিন্ন গ্রীনহাইজ গ্যাস (যেমন জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন) এর কারণে বায়ুমণ্ডলের বাইরে নিঃশেষিত হতে পারে না বরং শোষিত হয়ে আবার পৃথিবীতেই ফেরত আসে, তখন সেই প্রক্রিয়াকে Greenhouse Effect বলা হয়।
স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সুর্যরশ্মী বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করার পর, উচ্চ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সম্পন্ন রশ্মিরুপে বিকিরিত হয় কিন্তু গ্রীনহাইজ গ্যাস সমুহের কারনে বায়ুমন্ডলের বাইরে বের হতে পারে না যা পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলেছে, এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে Greenhouse Effect বলা হয়।
আরোও সহজ করে বলতে হলে,
গ্রিনহাউজ প্রভাব হচ্ছে বাতাসে জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন এবং আরও কিছু বিশেষ গ্যাসের উপস্থিতির কারণে পৃথিবীর উপরিভাগ এবং বায়ুমন্ডলের সবচেয়ে নিচের স্তরের উষ্ণতা বৃদ্ধির ঘটনা।
Britannica ডট কম অনুসারে, “a warming of Earth’s surface and troposphere (the lowest layer of the atmosphere) caused by the presence of water vapor, carbon dioxide, methane, and certain other gases in the air.”
শীতপ্রধান দেশসমুহে অত্যাধিক ঠান্ডার জন্য সব ধরণের সবজি চাষ করা সম্ভব নয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য ঐসকল দেশে গ্রীন হাউজ নামের এক ধরণের কাচ নির্মিত বাড়ি ব্যবহার করা হয়। এই সকল বাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোতে স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সুর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে। এই সুর্যের আলো প্রয়োজনীয় তাপও তৈরি করে যা আশে পাশের প্রকৃতি দ্বারা শোষিত হয়।
এই শোষিত তাপ প্রাকৃতিক নিয়মে বিকরিত তাপ রুপে পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই তাপের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়ার কারনে কাচের ভিতর দিয়ে বের হতে পারে না। এর ফলে পুরো গ্রীন হাউজ উষ্ণ হয়ে উঠে যা গাছপালা জন্মাতে সাহায্য করে।
আমাদের বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন গ্রীন হাউজ গ্যাসও একইভাবে কাচের ঘরের মতো আচরণ করে। এটি সুর্যের তাপকে প্রবেশ করতে দেয় কিন্তু বের হতে দেয় না। যার ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে চলেছে।
গ্রীন হাউজ এফেক্ট পরিবেশের উপরে বিভিন্ন বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে। এটি এখন নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এর কড়াল গ্রাস থেকে পৃথিবীর কোনো মানুষই মুক্তি পাবে না। এর বিরূপ প্রভাবের মাঝে রয়েছে:
আমরা প্রতিনিয়ত গাছ কেটে চলেছি যার ফলে বনভূমি উজার হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ বিভিন্ন Greenhouse গ্যাস এর পরিমান বেড়ে চলেছে। এই সকল গ্যাস গ্রীন হাউজ এফেক্টে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও অতিরিক্ত কলকারখানা তৈরি, নগরায়ন ইত্যাদি কারনেও এই প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
আমাজান জঙ্গলকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। গ্রিনহাউজ প্রভাব এর ফলে এই জঙ্গল আজ হুমকির মুখে। প্রতিনিয়ত আমাজনের পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে এবং এর জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে।
Greenhouse effect এর কারনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোর মাঝে বাংলাদেশ একটি। সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে বাংলাদেশের একটি বড় অংশ সমুদ্রের নিচে চলে যেতে পারে। এই সমস্যার কারণে জমিতে বাড়ছে লবণাক্ততার পরিমাণ। একই সাথে এই এলাকায় বর্ধিত হারে সাইক্লোন দেখা দিচ্ছে যার অন্যতম কারন Greenhouse effect।
আফ্রিকার অনেক দেশ Greenhouse effect সম্পর্কিত একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। Sahel এবং Horn of Africa এর মতো অঞ্চলগুলি ইতিমধ্যেই খরা এবং মরুকরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। যার ফলে নিরাপদ পানির অভাব, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মত সমস্যা দেখা দিচ্ছে।